ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo রাঙ্গামাটির ক্রীড়া অবকাঠামো নিয়ে হতাশ বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর Logo সোজা আঙুলে না উঠলে বাঁকা করব, ঘি আমাদের লাগবেই: জামায়াত নেতা তাহের Logo তিন বছরে রাহা: ভাইয়ের মেয়েকে জন্মদিনে আবেগঘন বার্তা রণবীরের বোনের Logo ট্রাম্পের দাবি: ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ৮ যুদ্ধবিমান ধ্বংস, তার মধ্যস্থাতেই শান্তি স্থাপন Logo প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কাঠামোতে বড় পরিবর্তন Logo জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি তুললেন বিএনপি নেতা আলাল Logo ইমরান হাশমির কারণে স্কুলে যেতে লজ্জা পাচ্ছেন তার ছেলে আয়ান! Logo স্বর্ণপ্রেমীদের জন্য সুখবর! কমেছে ভরিপ্রতি দাম Logo প্রেম, পরকীয়া আর বিতর্কে টালমাটাল ব্রিটিশ রাজপরিবার Logo সুদানে আরএসএফ বাহিনীর তাণ্ডব, মানবিক বিপর্যয় তীব্র

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত নিরীহ মানুষের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলো ইসরায়েলি সেনারা

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি : সংগৃহিত

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বদলে গঠিত হয় ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামে একটি বিতর্কিত ত্রাণ সংস্থা, যার মাধ্যমে দখলদার ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গাজাবাসীদের জন্য ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়।

তবে এই উদ্যোগ শুরু থেকেই বিপর্যয়ের রূপ নেয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ওই ফাউন্ডেশনের আওতায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় চার হাজার।

এই বর্বর ঘটনাগুলোর ভেতরের কিছু বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য। তারা দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হারেৎজকে জানান, এসব মানুষ ইসরায়েলি সেনাদের জন্য কোনো হুমকি তৈরি করেনি, তবুও তাদের ওপর গুলি চালানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা বলেন, “এটা ছিল এক ধরনের হত্যার মাঠ। আমি যেখানে দায়িত্বে ছিলাম, প্রতিদিন গড়ে এক থেকে পাঁচজনকে হত্যা করা হতো। কোনো সতর্কতা, কোনো কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার না করে সরাসরি গুলি, কামান ও ভারী অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ চালানো হতো। মানুষগুলো বুঝত গুলি থামলেই তারা সামনে যেতে পারবে। অর্থাৎ আমাদের একমাত্র ‘যোগাযোগ’ ছিল গুলি।”

তিনি আরও জানান, “অনেক সময় আমরা বহু দূর থেকে গুলি চালাতাম, আবার কিছুক্ষেত্রে এত কাছে গুলি করা হতো যে, সেটা সরাসরি হত্যার সমান ছিল। অথচ, তাদের কারো হাতেই কোনো অস্ত্র ছিল না, কেউই সেনাবাহিনীর জন্য হুমকি ছিল না।”

অপর এক সেনার ভাষায়, “ক্ষুধার্ত মানুষদের প্রতিহত করতে কামানের গোলা ছোঁড়া কোনো পেশাদারিত্ব নয়। এটি মানবিকতাবিরোধী কাজ। হ্যাঁ, হামাসের যোদ্ধারা সেখানে থাকতে পারে, তবে অনেক সাধারণ মানুষ ছিল যারা শুধু খাবার নিতে গিয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “সেখানে এক ধরনের নিজস্ব আইন চলছে। প্রাণহানি যেন কোনো ব্যাপারই না। এমনকি নিহতদের মৃত্যু দুর্ঘটনাও বলে বিবেচনা করা হয় না।”

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও, তাদের সামরিক তদন্ত সংস্থা — মিলিটারি অ্যাডভোকেট জেনারেল অফিস জানিয়েছে, নিরস্ত্র ত্রাণগ্রহীতাদের হত্যার অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে, কারণ এসব ঘটনা যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়তে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৯:৪৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
১২৮ বার পড়া হয়েছে

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত নিরীহ মানুষের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলো ইসরায়েলি সেনারা

আপডেট সময় ০৯:৪৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বদলে গঠিত হয় ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামে একটি বিতর্কিত ত্রাণ সংস্থা, যার মাধ্যমে দখলদার ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গাজাবাসীদের জন্য ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়।

তবে এই উদ্যোগ শুরু থেকেই বিপর্যয়ের রূপ নেয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ওই ফাউন্ডেশনের আওতায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় চার হাজার।

এই বর্বর ঘটনাগুলোর ভেতরের কিছু বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য। তারা দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হারেৎজকে জানান, এসব মানুষ ইসরায়েলি সেনাদের জন্য কোনো হুমকি তৈরি করেনি, তবুও তাদের ওপর গুলি চালানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা বলেন, “এটা ছিল এক ধরনের হত্যার মাঠ। আমি যেখানে দায়িত্বে ছিলাম, প্রতিদিন গড়ে এক থেকে পাঁচজনকে হত্যা করা হতো। কোনো সতর্কতা, কোনো কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার না করে সরাসরি গুলি, কামান ও ভারী অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ চালানো হতো। মানুষগুলো বুঝত গুলি থামলেই তারা সামনে যেতে পারবে। অর্থাৎ আমাদের একমাত্র ‘যোগাযোগ’ ছিল গুলি।”

তিনি আরও জানান, “অনেক সময় আমরা বহু দূর থেকে গুলি চালাতাম, আবার কিছুক্ষেত্রে এত কাছে গুলি করা হতো যে, সেটা সরাসরি হত্যার সমান ছিল। অথচ, তাদের কারো হাতেই কোনো অস্ত্র ছিল না, কেউই সেনাবাহিনীর জন্য হুমকি ছিল না।”

অপর এক সেনার ভাষায়, “ক্ষুধার্ত মানুষদের প্রতিহত করতে কামানের গোলা ছোঁড়া কোনো পেশাদারিত্ব নয়। এটি মানবিকতাবিরোধী কাজ। হ্যাঁ, হামাসের যোদ্ধারা সেখানে থাকতে পারে, তবে অনেক সাধারণ মানুষ ছিল যারা শুধু খাবার নিতে গিয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “সেখানে এক ধরনের নিজস্ব আইন চলছে। প্রাণহানি যেন কোনো ব্যাপারই না। এমনকি নিহতদের মৃত্যু দুর্ঘটনাও বলে বিবেচনা করা হয় না।”

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও, তাদের সামরিক তদন্ত সংস্থা — মিলিটারি অ্যাডভোকেট জেনারেল অফিস জানিয়েছে, নিরস্ত্র ত্রাণগ্রহীতাদের হত্যার অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে, কারণ এসব ঘটনা যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়তে পারে।