জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে গৃহস্থালী কাজের অবদান
রুমা আক্তার, যার ব্যস্ততা শুরু হয় ভোরের আলো ফোটার আগ থেকেই। রাজধানীর এই বাসিন্দা তিন বেলা নিজেই রান্না করে একটি হোটেল চালান। স্বামী সহযোগিতা করলেও মূল কাজ করেন এই নারী। আয়ের অর্থে চলে সংসার, তিন সন্তানের লেখাপড়া।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় বস্তি কড়াইলের বেশিরভাগ নারীই গৃহকর্মে নিয়োজিত। সকালে থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাদের কাজ। মাসে একেকজনের আয় হয় ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গৃহকর্মে নারীদের এই অংশগ্রহণ বাড়ছে। তবে, অর্থনীতিতে এই কাজের নেই স্বীকৃতি। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণা বলছে, গৃহস্থালি কাজে দেশের নারীরা বছরে ব্যয় করছেন প্রায় ১৭ হাজার ঘণ্টা। আর্থিক মূল্যও বড়, প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। যা যোগ করলে বড় হবে জিডিপি।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এক্ষেত্রে আমরা বিষয়টিকে আনপেইড কেয়ার ওয়ার্ক বলে থাকি। এই কাজে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ নারী কাজ করে। এর আর্থিক মূল্য ৬ লাখ ৩১ কোটি টাকার মতো। যার মধ্যে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা নারীদের। এটি জিডিপিতে যুক্ত হওয়ার মতো আইন।
গৃহকাজের মূল্যায়ন ছাড়া পরিপূর্ণ হবে না অর্থনীতির ব্যপ্তি। তাই আর্থিক অবদান নিরূপণে নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে পরিসংখ্যান ব্যুরো।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান আহমেদ বলেছেন, নারীরা শুধুমাত্র রান্না করে না, তারা কৃষিপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করে থাকে। স্বীকৃতি হিসেবে এই কাজগুলোর মূল্যমান আনা গেলে তা সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে গৃহস্থালী কাজের সার্বিক দিক নিয়ে দেয়া থাকবে ধারণা।