ব্রেকিং নিউজ :
দেশের অর্থনীতিতে অশনিসংকেত
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিতে দেশে সংকুচিত হচ্ছে ব্যবসার পরিধি। মূল্যস্ফীতি কমাতে দফায় দফায় নীতি সুদহার বাড়ানোর পর এমন অভিজ্ঞতাই তুলে ধরছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, আকাশচুম্বী সুদের চাপে পড়েছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নীতি সুদহার বাড়িয়ে আপৎকালীন সংকট সামাল দেয়া সম্ভব হলেও দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে অর্থনীতিতে।
মূল্যস্ফীতি কমাতে এক মাসের ব্যবধানে দুই দফায় নীতি সুদহার বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথমে ৯ শতাংশ এবং পরে আরও ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাংক ঋণের সুদ বেড়ে হয়েছে ১৫ শতাংশের বেশি। এতে করে একদিকে যেমন ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ বেড়েছে, অন্যদিকে সংকুচিত হচ্ছে ব্যবসার পরিধি।
সুদহার বাড়িয়ে, মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে, মূল্যস্ফীতি সামালের যে পদক্ষেপ বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়েছে, তা আপতত কার্যকরী হলেও দীর্ঘমেয়াদে আত্মঘাতী বলে মত সংশ্লিষ্টদের। সামনে সুদহার আরও বাড়ানো হলে বিনিয়োগ কমার পাশাপাশি, কর্মসংস্থানেও সংকট দেখা দেয়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) সভাপতি হুমায়ূন রশিদ সময় সংবাদকে বলেন,
সুদহার বেড়ে গেলে দ্রব্যমূল্যও বেড়ে যায়। অনেকটা বাসভাড়ার মতো। ডিজেলের দাম বাড়লে বাসভাড়া বাড়ে। এ রকম এখানেও বিষয়টি একই রকম দাঁড়াবে। সুদহার একটু বাড়লেই জিনিসপত্রের দাম বাড়া শুরু করবে। ভোক্তা পর্যায়ে মানুষের সহনশীলতা থাকবে না। এতে বিনিয়োগও কমে যাবে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, সুদহার বৃদ্ধির বিষয়টি বেশিদিন চললে বিনিয়োগ কমে আসবে। কিছু কিছু ব্যবসার বিষয়ে অন্য কিছু ভাবতে হবে। কারণ দেখা যাবে, ওই ব্যবসা চালানোর মতো মূলধন নেই। এতে কর্মসংস্থানের ওপরও প্রভাব পড়বে। ব্যবসার পরিসর ছোট করে আনতে হয়। এতে চাকরির জায়গা কমে যায়। নতুন চাকরির সুযোগও তৈরি হয় না।
এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি সামাল দেয়ার একমাত্র অস্ত্র হিসেবে সুদহার বাড়ানোর দীর্ঘমেয়াদি নীতি আগামী দিনে বুমেরাং হয়ে আঘাত আনতে পারে দেশের ব্যবসা খাতে।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘সুদহার অনেক বেড়ে গেলে ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বেড়ে যাবে। কারণ সুদহারের প্রভাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে উৎপাদনের খরচ বাড়িয়ে দেবে, আমদানির খরচ বাড়িয়ে দেবে।’