নিউইয়র্ক নির্বাচনে জয় পেয়ে ভারতে বিতর্কের কেন্দ্রে জোহরান মামদানি
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে বিজয় অর্জনের পর আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ রাজনীতিবিদ জোহরান মামদানি। ৩৩ বছর বয়সী এই প্রগতিশীল নেতা এখন শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, ভারতেও তীব্র আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
মামদানির মুসলিম পরিচয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কড়া সমালোচনা এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরোধিতার কারণে ভারতের ডানপন্থী মহলে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধির আহ্বান, গণপরিবহন ফ্রি করা, শিশু যত্নে সরকারি সহায়তার মতো বামপন্থী অবস্থানের কারণে ভারতীয় প্রগতিশীলদের মধ্যে তার প্রতি আগ্রহ ও সমর্থন বেড়েছে।
অনেকে মামদানিকে ভারতের আম আদমি পার্টি-র আদলে একটি ‘বিকল্প রাজনৈতিক কণ্ঠ’ হিসেবে দেখছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো তিনিও প্রচলিত রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করছেন।
সম্প্রতি বিদেশে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতাদের উত্থান যেমন উদযাপন করেছে ভারতের রক্ষণশীল মহল— উদাহরণস্বরূপ রিশি সুনাক— মামদানির ক্ষেত্রে বিষয়টি উল্টো। কারণ তিনি মুসলিম এবং ধর্মীয় পরিচয় গোপন না করে স্পষ্টভাবে নিজের মতাদর্শ প্রকাশ করেছেন, যা তাকে ভারতীয় রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।
এমনকি কংগ্রেস নেতা অভিষেক সিংভি এবং শিবসেনার মিলিন্দ দেওরাও তাকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। দেওরা লিখেছেন, “অনেক মুম্বাইবাসী জানেন মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র হতে চলেছেন, কিন্তু মুম্বাইয়ের শেষ তিন মেয়রের নাম জানেন না।”
তবে বিশ্লেষকদের মতে, মামদানির জয় শুধুই একটি ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর বার্তা — সিটি করপোরেশন বা নগর প্রশাসনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা।
এদিকে মার্কিন রাজনীতিতে মামদানির এই উত্থান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যৎ নীতিমালায় প্রভাব ফেলতে পারে। কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করছেন, তার বামপন্থী অবস্থান হয়তো মধ্যপন্থী ভোটারদের বিচ্ছিন্ন করতে পারে। অন্যদিকে, অনেকেই মনে করেন, রিপাবলিকানদের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ এর পাল্টা বার্তা হতে পারেন মামদানি।