বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনে কার লাভ কার ক্ষতি?

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে চলমান সম্পর্কের টানাপোড়েনে উভয় দেশই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সময় সংবাদকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

মাসরুর রিয়াজ বলেন, বাণিজ্যিক দিক বিবেচনায় সম্পর্কের টানাপোড়েনে দুই দেশের জন্য লাভ ক্ষতি আছে। গত ৪ মাস ধরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে গত সরকারের সময় বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্ক বজায় ছিল।

তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দুই দেশের মধ্যে কিছুটা সম্পর্কের অবনতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন মিডিয়া বর্তমানে বাংলাদেশকে নিয়ে অপতথ্যও ছড়াচ্ছে। এরপর ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বাড়ে।

এর কারণে যদি দুই দেশের সম্পর্কে ভাটা পড়ে বা একেবারে স্থবির হয়ে যায় তাহলে সেটি উভয় দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে জানান মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি ভারতও চায় না, বাংলাদেশও নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যে বলেছেন, ভারত আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। দেশটির সঙ্গে আমরা গঠনমূলক সম্পর্ক চাই। যা সমতা ও মিউচুয়্যাল রেসপেক্টের মাধ্যমে গড়ে উঠবে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক গভীর ও পুরোনো উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েকটি কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের স্থবিরতা চাই না। প্রথমত প্রতিটি রাষ্ট্রকেই তার প্রতিবেশীকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। পাশাপাশি কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। এছাড়া হঠাৎ করে কোনো রাজনৈতিক কারণে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত বা বন্ধ হলে দুইপক্ষই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, ভারতের সেরা ৫টি রফতানি গন্তব্যের একটি বাংলাদেশ। এছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ মানুষ চিকিৎসাসহ নানা কারণে ভারত ভ্রমণে যায়। সম্পর্কের অবনতি হলে ট্যুরিজম, মেডিকেলসহ দেশটির বিভিন্ন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ পণ্য আমদানিতে ভারতের ওপর নির্ভরশীল। সম্পর্কের অবনতিতে বাড়বে পণ্য আমদানি খরচ ও সময়।

ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী উল্লেখ করে মাসরুর রিয়াজ আরও বলেন, এতে করে পণ্য আমদানিতে খরচ ও সময় কম লাগে। এটা অন্য দেশ থেকে আমদানি করলে খরচ ও সময় বেড়ে যাবে। তবে বিকল্প দেশ অবশ্যই ভাবতে হবে। তাহলে বাড়বে পণ্যের বৈচিত্র্য। এজন্য অন্যান্য দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি বাড়াতে হবে।