মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) অনুষ্ঠিত ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
সকাল ১০টায় গেট খোলার পরপরই মেলা প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেছেন দর্শনার্থীরা। তবে চাপ তেমন একটা নেই বললেই চলে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ চাপ বাড়বে বলে আশা ব্যবসায়ীদের। তারা বলেন, দূরত্ব, শীত ও মূল্যস্ফীতির প্রভাব বিবেচনায় এবার এখনও তেমন জমে ওঠেনি মেলা। বেচাকেনাও কম।
১০ জানুয়ারির পর বেচাকেনা বাড়বে- এমন প্রত্যাশা করে ব্যবসায়ীরা জানান, এখনও মানুষ ঘুরে ঘুরে পণ্য দেখছেন। ১০ তারিখের পর বেচাকেনা বাড়তে পারে। আর ২০ তারিখের পর বিভিন্ন ধরনের ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানো হলে মেলা জমজমাট হয়ে উঠবে।
তবে এবার আসবাবপত্রকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করায় বেচাবিক্রি কিছুটা ভালো বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, বাণিজ্য মেলার অন্যতম আকর্ষণ থাকে ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র। আর চলতি বছর আসবাবপত্রকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করায় বেচাবিক্রি কিছুটা বেড়েছে।
আর ক্রেতা-দর্শনার্থীরা বলেন, প্রথম দিকে শুধু স্টল ঘুরে দেখার জন্য আসা, কেনাকাটা শুরু হবে মাঝামাঝি সময় থেকে। এখনও জিনিসপত্রের দাম চড়া। ব্যতিক্রমধর্মী পণ্যও কম। শেষ দিকে স্টল-প্যাভিলিয়নগুলো ক্রেতা আকৃষ্টে নানারকম ছাড় দিয়ে থাকে। তখন কম দামে পণ্য কেনা যাবে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, এবারের বাণিজ্য মেলায় বিশ্বের ৭টি দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠানসহ মেলায় থাকছে ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থানকে প্রাধান্য দিয়ে হবে জুলাই চত্বর, ছত্রিশ চত্বর ও তারুণ্যের প্যাভিলিয়ন। ই-টিকিটের ব্যবস্থা থাকায় প্রবেশ পথে রয়েছে ভিন্ন ব্যবস্থা।
প্রথমবারের মতো অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল বা প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে বিশেষ ছাড়ে উবার সার্ভিস।
মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর বা পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ বছর। বিদেশি উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে থাকছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন। বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তি কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার। শিশুদের নির্মল চিত্তবিনোদনের জন্য মেলায় থাকছে শিশু পার্কও।
এছাড়া মেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানার্থে তৈরি করা হয়েছে জুলাই চত্বর ও ছত্রিশ চত্বর। সঙ্গে দেশের তরুণ সমাজকে রফতানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধকরণে তৈরি করা হয়েছে ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন।
মেলা মাসব্যাপী সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আয়োজন করা হতো। করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলা আয়োজন করা হয়নি। আর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলা পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে আয়োজন করা হয়।