সুপারশপ ও নামিদামি প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনতে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের ওপর ভ্যাট বা মূসক দিতে বাধ্য হন ক্রেতারা। যদিও একই পণ্য সাধারণ দোকানপাট ও বাজার থেকে খুচরা মূল্য পরিশোধ করেই কেনার সুযোগ পান ভোক্তা।
তারা বলেন, সচেতন নাগরিক হিসেবে সবারই উচিত ভ্যাট দেয়া। তবে জনগণ ভ্যাট দিলেও সুপারশপ ও নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাট ঠিকমতো জমা দিচ্ছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
পণ্য বিক্রির দোকান বা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানভেদে যেমন ভ্যাট আদায় ব্যবস্থাপনায় বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরছেন ক্রেতারা। তেমনি আদায়কারীকে বিভিন্ন সময় পুরস্কার ও সম্মাননা দেয়া হলেও কোনো স্বীকৃতি পান না ভ্যাটদাতারা।
ভ্যাটদাতাদের অভিযোগ, ভ্যাট দিচ্ছেন ভোক্তা। তবে আদায়কারীরা শুধু সংগ্রহ করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিচ্ছেন তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে। এ নিয়ম পরিবর্তন হওয়া দরকার।
অথচ রাজস্ব আয়ের বড় অংশের অর্থের জোগান আসে এই ভ্যাট থেকেই। যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি এনবিআরের আদায়। শুধু তাই নয়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বরং ভ্যাটের আদায় কমেছে আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়েও।
তরুণ প্রযুক্তিবিদরা মনে করেন, আদায় প্রক্রিয়ার জটিলতা দূর করতে পারলেই বাড়বে ভ্যাটের পরিমাণ। তথ্য প্রযুক্তি গবেষক ও উদ্ভাবক প্রকৌশলী মো. জাকারিয়া মল্লিক বলেন, ভ্যাট সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এটি ব্যবসায়ীর হিসেবে জমা হওয়ারই কোনো প্রয়োজন নেই।
আইন অনুযায়ী স্থানীয় পর্যায়ে খুচরা মূল্যের সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত থাকার কথা থাকলেও তা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবায়ন হয় না। রয়েছে কর ফাঁকির প্রবণতাও। যা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কাস্টমস ও ভ্যাটের সাবেক কমিশনার মো. আব্দুল কাফি বলেন, ভ্যাট অথরিটির মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হবে। ভ্যাট আদায়ের প্রক্রিয়া মানুষের কাছে আরও দৃশ্যমান করতে হবে।
এনবিআর বলছে, ভ্যাট আদায়কে সহজ করতে নানামুখী উদ্যোগে কাজ চলছে। এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগের মহাপরিচালক অরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়া সহজ করতে কাজ করছে এনবিআর।
ভ্যাট আদায়কে সহজ করতে এনবিআর কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।