ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo নারায়ণগঞ্জে আনিসুল হককে কিল-ঘুষি, দৌড়ে রক্ষা পেলেন গণধোলাই থেকে Logo যুদ্ধে রাশিয়ায় সৈন্য পাঠানো নিশ্চিত করলো উত্তর কোরিয়া Logo ইরানের বন্দরে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪০ Logo শেষ মুহূর্তে বাসার আল আসাদকে বাঁচাতে বিমান পাঠিয়েছিল ইরান— দাবি নেতানিয়াহুর Logo বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের জন্য ভালো সমাধান’ Logo ভারতের বিকল্প সিলেট থেকে উড়াল দিলো কার্গো প্লেন Logo বিচ্ছেদের পর যে নায়িকা এখনও সিঙ্গেল Logo দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস Logo এ. কে. ফজলুল হকের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলেন তারেক রহমান Logo কোনো সারার সঙ্গেই আমি প্রেম করছি না: শুভমান গিল

লাগামহীন চালের বাজার, নেপথ্যে কারা?

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

লাগামহীন চালের বাজার, নেপথ্যে কারা?

মোকাম ও গুদামে পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও লাগামহীন চালের বাজার। ধানের বাড়তি দামের অজুহাতে সপ্তাহ ব্যবধানে ৫০ কেজির বস্তায় দেড়শ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে দাম। এর আগে, গত দুমাসে বন্যা ও যানজটের অজুহাতে বাড়ানো হয়েছিলো ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।

ধানের বাড়তি দামের অজুহাতে সপ্তাহ ব্যবধানে বস্তায় দেড়শ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে চালের দাম।

এ মুহূর্তে দেশে যেমন বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই, তেমনি নেই ধান-চালের সংকট। একই সঙ্গে চালের মোকামখ্যাত রাজশাহী, দিনাজপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, পাবনা ও বগুড়ার সরবরাহ লাইনও পুরোপুরি স্বাভাবিক। কিন্তু তারপরও চট্টগ্রামের পাইকারি চাল বাজারগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। বিশেষ করে মোটা সেদ্ধ চালের ৫০ কেজির বস্তায় গত এক সপ্তাহে দেড়শ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২৩৫০ টাকা, মিনিকেট সেদ্ধ ২৯৫০ টাকা, স্বর্ণা সেদ্ধ ২ হাজার ৬৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ঝিরাশাইল এবং নাজিরশাইলের বস্তায় বেড়েছে ১০০ টাকা করে।


পাহাড়তলীর মেসার্স আজমীর স্টোরের মালিক এস এম নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘যেহেতু চট্টগ্রামে চাল নেই, উত্তরবঙ্গ থেকে আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে। তারা যা বলে, আমাদের সেটাই শুনতে হচ্ছে। তারা আমাদের বলছে, এখন ধানের দাম বাড়তি, তাই সেখানে চালের দাম বেড়েছে।’


সেদ্ধ চালের বিপরীতে বিক্রি কমে যাওয়ায় আতপ চালের দাম বাড়ার হার একটু কমেছে। গত এক সপ্তাহে ইরি আতপ প্রতি বস্তায় ৫০ টাকা, মিনিকেট, পাইজাম ও কাটারিভোগের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা করে। এর আগে, বন্যা এবং রাস্তায় যানজটের অজুহাতে চালের দাম বাড়ানো হলেও এবার তার সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছে ধানের দাম বেড়ে যাওয়া। তবে দেশের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলে মোকামের পাশাপাশি মিলেও চালের মজুত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের।
পাহাড়তলী ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘কেবলই বলছে, ধানের দাম বাড়তি, ধান পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু দেশে প্রচুর পরিমাণে ধান আছে; মোকামেও আছে মজুত। এমনকি সরকারি গুদামেও চাল মজুত আছে। কিন্তু দাম কেনো বাড়ছে সেটার খোঁজ আমরা পাচ্ছি না।’

পাহাড়তলী ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেজা খান বলেন, ‘শুধু ধানের দাম বেড়েছে এটা ঠিক না। আমার মনে হয়, উত্তরবঙ্গের মিলার ও আড়তদাররা একটু ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়ে আছেন। যেন তাদের ধ্যানধারণা এমন — এ সুযোগে যা করে নেয়া যায় আরকি। ভাবনায় এমনটাও দাঁড় করানো যায়।’

এদিকে, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, চালের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে মোকাম মালিক এবং মিল ব্যবসায়ীদের কারসাজি যেমন রয়েছে, তেমনি করপোরেট হাউজগুলোর বাড়তি লাভের চেষ্টাকে দায়ী করা যায়। বিশেষ করে করপোরেট হাউজগুলো সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান এবং চাল কিনে নিজেরা মজুত করায় প্রভাব পড়ছে বাজারে।

ক্যাব চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার সাবেরী বলেন, ‘যারা চালের ব্যবসা করেন, তারা বলছেন, তাদের কোনো সংকট নেই। যারা মৌসুমি ব্যবসায়ী, তারা করপোরেট গ্রুপগুলোর অধিকতর মুনাফার লোভে এখানে বিনিয়োগ করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।’

দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মোকাম থেকে প্রতিদিন নগরীর পাহাড়তলী বাজারে গড়ে ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন এবং চাক্তাই বাজারে ১৩শ মেট্রিক টন চাল আসছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:৪৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
৫৮ বার পড়া হয়েছে

লাগামহীন চালের বাজার, নেপথ্যে কারা?

আপডেট সময় ০৩:৪৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

লাগামহীন চালের বাজার, নেপথ্যে কারা?

মোকাম ও গুদামে পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও লাগামহীন চালের বাজার। ধানের বাড়তি দামের অজুহাতে সপ্তাহ ব্যবধানে ৫০ কেজির বস্তায় দেড়শ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে দাম। এর আগে, গত দুমাসে বন্যা ও যানজটের অজুহাতে বাড়ানো হয়েছিলো ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।

ধানের বাড়তি দামের অজুহাতে সপ্তাহ ব্যবধানে বস্তায় দেড়শ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে চালের দাম।

এ মুহূর্তে দেশে যেমন বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই, তেমনি নেই ধান-চালের সংকট। একই সঙ্গে চালের মোকামখ্যাত রাজশাহী, দিনাজপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, পাবনা ও বগুড়ার সরবরাহ লাইনও পুরোপুরি স্বাভাবিক। কিন্তু তারপরও চট্টগ্রামের পাইকারি চাল বাজারগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। বিশেষ করে মোটা সেদ্ধ চালের ৫০ কেজির বস্তায় গত এক সপ্তাহে দেড়শ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২৩৫০ টাকা, মিনিকেট সেদ্ধ ২৯৫০ টাকা, স্বর্ণা সেদ্ধ ২ হাজার ৬৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ঝিরাশাইল এবং নাজিরশাইলের বস্তায় বেড়েছে ১০০ টাকা করে।


পাহাড়তলীর মেসার্স আজমীর স্টোরের মালিক এস এম নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘যেহেতু চট্টগ্রামে চাল নেই, উত্তরবঙ্গ থেকে আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে। তারা যা বলে, আমাদের সেটাই শুনতে হচ্ছে। তারা আমাদের বলছে, এখন ধানের দাম বাড়তি, তাই সেখানে চালের দাম বেড়েছে।’


সেদ্ধ চালের বিপরীতে বিক্রি কমে যাওয়ায় আতপ চালের দাম বাড়ার হার একটু কমেছে। গত এক সপ্তাহে ইরি আতপ প্রতি বস্তায় ৫০ টাকা, মিনিকেট, পাইজাম ও কাটারিভোগের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা করে। এর আগে, বন্যা এবং রাস্তায় যানজটের অজুহাতে চালের দাম বাড়ানো হলেও এবার তার সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছে ধানের দাম বেড়ে যাওয়া। তবে দেশের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলে মোকামের পাশাপাশি মিলেও চালের মজুত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের।
পাহাড়তলী ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘কেবলই বলছে, ধানের দাম বাড়তি, ধান পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু দেশে প্রচুর পরিমাণে ধান আছে; মোকামেও আছে মজুত। এমনকি সরকারি গুদামেও চাল মজুত আছে। কিন্তু দাম কেনো বাড়ছে সেটার খোঁজ আমরা পাচ্ছি না।’

পাহাড়তলী ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেজা খান বলেন, ‘শুধু ধানের দাম বেড়েছে এটা ঠিক না। আমার মনে হয়, উত্তরবঙ্গের মিলার ও আড়তদাররা একটু ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়ে আছেন। যেন তাদের ধ্যানধারণা এমন — এ সুযোগে যা করে নেয়া যায় আরকি। ভাবনায় এমনটাও দাঁড় করানো যায়।’

এদিকে, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, চালের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে মোকাম মালিক এবং মিল ব্যবসায়ীদের কারসাজি যেমন রয়েছে, তেমনি করপোরেট হাউজগুলোর বাড়তি লাভের চেষ্টাকে দায়ী করা যায়। বিশেষ করে করপোরেট হাউজগুলো সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান এবং চাল কিনে নিজেরা মজুত করায় প্রভাব পড়ছে বাজারে।

ক্যাব চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার সাবেরী বলেন, ‘যারা চালের ব্যবসা করেন, তারা বলছেন, তাদের কোনো সংকট নেই। যারা মৌসুমি ব্যবসায়ী, তারা করপোরেট গ্রুপগুলোর অধিকতর মুনাফার লোভে এখানে বিনিয়োগ করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।’

দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মোকাম থেকে প্রতিদিন নগরীর পাহাড়তলী বাজারে গড়ে ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন এবং চাক্তাই বাজারে ১৩শ মেট্রিক টন চাল আসছে।