অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের দাবি, অন্যায়ের বিরুদ্ধেই তাদের এ তৎপরতা। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ সমন্বয়করা বলছেন, এলাকাভিত্তিক কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রুপ এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
সম্প্রতি মিরপুর মডেল থানা চত্বরে কয়েকজন তরুণ-তরুণী মিলে বেধড়ক মারধর করেন মাঝবয়সি এক নারীকে। অভিযোগ, ওই নারী শিশুচুরির সঙ্গে জড়িত। খোদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর নাকের ডগায় এহেন কর্মকাণ্ডের পরও নির্বিকার যেন সবাই।
জানা যায়, মারধরকারীরা মিরপুরে পরিচিত টিম ট্রিপল এসের সদস্য। শিশু হাসপাতালে ঢুকে প্রকাশ্যে চিকিৎসকদের হেনস্তারও অভিযোগ রয়েছে গ্রুপটির বিরুদ্ধে।
প্রতিনিয়ত এমন ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন তিন মাস আগে গণদাবি নিয়ে মাঠে থাকা শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিচয়ে মিরপুরের একটি ভবনে অভিযান চালানোর সময় দোকানে লুটপাট করে টিম ট্রিপল এস। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ধানমন্ডি থেকে আসা ‘টিম অভিযোগ’ নামে আরেকটি দল। নির্বিচারে সেদিন ১৮টি দোকান ভাঙচুর করা হয়।
মিরপুর মহিলা সমিতির ভবনটি নিয়ে দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে আইনি লড়াই। ৫ আগস্ট পটপরির্তনের পর নিজেকে সমিতির সভাপতি দাবি করেন দেলোয়ারা আক্তার রিনা নামে এক নারী। ভবনটি দখলে নিতে ট্রিপল এস ও টিম অভিযোগের সদস্যদের সহায়তা নেন তিনি। উদ্দেশ্য হাসিলের পর সিদ্ধান্ত হয়, আইনি সমাধানের চেষ্টা হলে হামলা করা হবে মিরপুর মডেল থানাতেও।
রিনা বলেন, ‘যে কাজটা আমরা এত বছরেও পারি নাই, সেটা এই ছেলেপেলেদের মাধ্যমে উদ্ধার করেছি।’
সাম্প্রতিক এসব ঘটনা নিয়ে গ্রুপ দুটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সময় সংবাদ। সাড়া মেলেনি টিম ট্রিপল এসের। টিম অভিযোগের দাবি, যা কিছু হচ্ছে ,তাতে সায় আছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের।
রাজধানীর সীমা ছাড়িয়ে এসব ঘটনা এখন কম-বেশি দেশজুড়েই ঘটে চলেছে। গাজীপুরের শ্রীপুরে ডাকঘরে ঢুকে ম্যানেজারকে আটকে রেখে ভাঙচুর এবং ২ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগের তীরও শিক্ষার্থীদের দিকেই।
জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা অবশ্য এসব ঘটনাকে দেখছেন কিশোর গ্যাংয়ের অপকর্ম হিসেবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘টিম অভিযোগ ও টিম এসএস — এগুলো হচ্ছে গ্যাং কালচার। কিন্তু আমাদের কোনো কর্মকাণ্ড হলে কোনো টিমের নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হবে। আমারা তো কোনো গ্যাং কিংবা টিমের সঙ্গে বসি না।’