ঢাকা ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে লাখ লাখ টাকার পাঙাশ

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

পদ্মায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে লাখ লাখ টাকার পাঙাশ।

গত এক সপ্তাহ ধরে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ এলাকায় পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর পাঙাশ মাছ ধরা পড়ছে। একসঙ্গে এত পাঙাশ মাছ জেলেদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। দুই শতাধিক জেলে নৌকা গড়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছে। জেলার সুরেশ্বর বাজারে পাঙ্গাশের ছড়াছড়ি।

জেলায় প্রায় ২৬ হাজার জেলে নদীতে মাছ শিকার করেন। ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকে। ২২ দিন বন্ধ থাকার পরে মাছ শিকার শুরু করেন জেলেরা। এখন জালে ধরা খাচ্ছে পাঙ্গাশ মাছ। জেলার পদ্মা নদীর নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা, নওপাড়া ও ঘরিসার এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা, তারাবুনিয়া ও চরভাগা এলাকায় পদ্মা নদীতে জেলেরা মাছ শিকার করতে নেমে পাচ্ছেন পাঙাশ। আর তা বিক্রি করছেন নড়িয়ার সুরেশ্বর মাছের পাইকারি বাজারে।


সকাল হতেই সুরেশ্বর মাছ বাজারের পাশে পদ্মা নদীতে নোঙর করা থাকে শতাধিক নৌকা। পাইকারি বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসে নানা প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পাঙ্গাশ মাছ।


ছোট বড় সব ধরনেরই পাঙ্গাশ মাছ রয়েছে এই বাজারে। ৩ কেজি থেকে শুরু করে ১২ কেজি পর্যন্ত ওজনের পাঙ্গাশ মাছ পাওয়া যায় এখানে। এই মাছ ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ স্থানীয় পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি মাছ বিক্রি করা হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দামে।

ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা ইউনিয়নের বোরোকাঠি এলাকার জেলে লিয়াকত হোসেন ২০ বছর ধরে পদ্মা নদীতে মাছ ধরছেন। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে তিনি পাঙাশ মাছ বিক্রি করেছেন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

নড়িয়ার নওপাড়া ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি এলাকার জেলে সোহাগ বলেন, ইলিশের পরিবর্তে এবার আমরা অনেক পাঙাশ মাছ পাইতেছি। দামও বেশ ভালোই পাচ্ছি। আমার মত সকল জেলেরাই অনেক পাঙ্গাশ মাছ পাচ্ছেন পদ্মা নদীতে।

সুরেশ্বর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী নীরব ঢালী বলেন, এই বাজারে প্রতিদিন পাঙ্গাশ মাছ উঠতো সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ টা। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন বাজারে উঠছে অন্তত ১৫০০ থেকে ২০০০ টি পাঙ্গাশ মাছ। দামও বেশ ভালই যাচ্ছে। এ মৌসুমে পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি করে জেলেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সাড়ে ছয়টার মধ্যেই বাজারের সব মাছ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাদিউজ্জামান বলেন, মাছ সাধারণত খাবারের সন্ধানে ও প্রজননের তাগিদে এসে থাকে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে নদীতে মাছ শিকার বন্ধ ছিল। তখন মাছ নির্বিঘ্নে স্থানান্তরের সুযোগ পেয়েছে। মিঠাপানিতে ইলিশের সঙ্গে পাঙ্গাশও এসেছে। তাই জেলেদের জালে এই মুহূর্তে এত বেশি পাঙাশ মাছ ধরা পড়ছে।
 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:০১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
৭ বার পড়া হয়েছে

পদ্মায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে লাখ লাখ টাকার পাঙাশ

আপডেট সময় ০৭:০১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

পদ্মায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে লাখ লাখ টাকার পাঙাশ।

গত এক সপ্তাহ ধরে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ এলাকায় পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর পাঙাশ মাছ ধরা পড়ছে। একসঙ্গে এত পাঙাশ মাছ জেলেদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। দুই শতাধিক জেলে নৌকা গড়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছে। জেলার সুরেশ্বর বাজারে পাঙ্গাশের ছড়াছড়ি।

জেলায় প্রায় ২৬ হাজার জেলে নদীতে মাছ শিকার করেন। ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকে। ২২ দিন বন্ধ থাকার পরে মাছ শিকার শুরু করেন জেলেরা। এখন জালে ধরা খাচ্ছে পাঙ্গাশ মাছ। জেলার পদ্মা নদীর নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা, নওপাড়া ও ঘরিসার এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা, তারাবুনিয়া ও চরভাগা এলাকায় পদ্মা নদীতে জেলেরা মাছ শিকার করতে নেমে পাচ্ছেন পাঙাশ। আর তা বিক্রি করছেন নড়িয়ার সুরেশ্বর মাছের পাইকারি বাজারে।


সকাল হতেই সুরেশ্বর মাছ বাজারের পাশে পদ্মা নদীতে নোঙর করা থাকে শতাধিক নৌকা। পাইকারি বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসে নানা প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পাঙ্গাশ মাছ।


ছোট বড় সব ধরনেরই পাঙ্গাশ মাছ রয়েছে এই বাজারে। ৩ কেজি থেকে শুরু করে ১২ কেজি পর্যন্ত ওজনের পাঙ্গাশ মাছ পাওয়া যায় এখানে। এই মাছ ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ স্থানীয় পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি মাছ বিক্রি করা হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দামে।

ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা ইউনিয়নের বোরোকাঠি এলাকার জেলে লিয়াকত হোসেন ২০ বছর ধরে পদ্মা নদীতে মাছ ধরছেন। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে তিনি পাঙাশ মাছ বিক্রি করেছেন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

নড়িয়ার নওপাড়া ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি এলাকার জেলে সোহাগ বলেন, ইলিশের পরিবর্তে এবার আমরা অনেক পাঙাশ মাছ পাইতেছি। দামও বেশ ভালোই পাচ্ছি। আমার মত সকল জেলেরাই অনেক পাঙ্গাশ মাছ পাচ্ছেন পদ্মা নদীতে।

সুরেশ্বর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী নীরব ঢালী বলেন, এই বাজারে প্রতিদিন পাঙ্গাশ মাছ উঠতো সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ টা। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন বাজারে উঠছে অন্তত ১৫০০ থেকে ২০০০ টি পাঙ্গাশ মাছ। দামও বেশ ভালই যাচ্ছে। এ মৌসুমে পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি করে জেলেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সাড়ে ছয়টার মধ্যেই বাজারের সব মাছ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাদিউজ্জামান বলেন, মাছ সাধারণত খাবারের সন্ধানে ও প্রজননের তাগিদে এসে থাকে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে নদীতে মাছ শিকার বন্ধ ছিল। তখন মাছ নির্বিঘ্নে স্থানান্তরের সুযোগ পেয়েছে। মিঠাপানিতে ইলিশের সঙ্গে পাঙ্গাশও এসেছে। তাই জেলেদের জালে এই মুহূর্তে এত বেশি পাঙাশ মাছ ধরা পড়ছে।