ঢাকা ১২:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রত্যেক নাগরিককে যুদ্ধের ট্রেনিং দেব: হাফিজ

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রত্যেক বাংলাদেশি নাগরিককে সামরিক ট্রেনিং দিয়ে প্রস্তুত করা হবে যুদ্ধের জন্য। প্রত্যেকটি ছাত্র যেনো রাইফেল চালাতে জানে সে ব্যবস্থা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষক ভারত সরকার ও তাদের গণমাধ্যমের অবিরাম মিথ্যা প্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন তিনি।


বাংলাদেশ একটি জনযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন হয়েছে জানিয়ে রণাঙ্গনের এই বীর যোদ্ধা বলেন,
সাধারণ মানুষ যুদ্ধ করে এ দেশের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ন এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে সঠিক ও যেকোনো কালিমামুক্ত রাখবে, এটি হলো আমাদের শপথ।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। প্রত্যেকটি ইনস্টিটিউশনকে ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি। এরপর দেশ ছেড়ে সাবেক আশ্রয়স্থল ভারতে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য, আনস্টেবল করার জন্য। আমি অবাক হয়ে যাই পৃথিবীর বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কীভাবে তাকে আশ্রয় দিলো। তারা কী ৫ আগস্টের লাখ লাখ মানুষের প্রমত্ত ঢেউ দেখেনি? যা দেখে শেখ হাসিনা এমনকি ইউনিফর্মধারী বাহিনী পর্যন্ত পালিয়ে গিয়েছিল। এই দৃশ্য দেখার পর কীভাবে তারা (ভারত) কল্পনা করে, কীভাবে হিসাব করে, দেশ দখল করতে কতদিন লাগবে।’


তিনি বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে ভারতের মনটা অনেক ক্ষুদ্র। প্রত্যেকটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে তারা (ভারত) বিষিয়ে তুলেছে। প্রত্যেকটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র আজ তাদের বিরুদ্ধে। সবচেয়ে বড় হিন্দু রাষ্ট্র নেপাল পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে। কারণ তারা (ভারত) যে দাদাগিরি করে, প্রতিবেশীকে দাবিয়ে রাখতে চায়— এটাতো একবিংশ শতাব্দীর মানুষ গ্রহণ করবে না। বাংলাদেশতো মোটেই না, যারা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে।’

মেজর অব. হাফিজ বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পৃথিবীর কোনও রাষ্ট্রে নাই। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়া কল্পকাহিনী ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে যে, এখানে (বাংলাদেশে) হিন্দুদের ওপর অন্যায়-অবিচার করা হচ্ছে। এ ধরনের কল্পকাহিনী ছড়িয়ে তারা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় যে, বাংলাদেশের মানুষ একপেশে, বাংলাদেশে কারও জীবন নিরাপদ নয়। আমরা সম্পূর্ণ এই মিথ্যাচারের নিন্দা জানাচ্ছি।’
 

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ যদি তারা (ভারত) শুরু করে তাহলে এই যুদ্ধ তাদের দেশে গিয়েই শেষ হবে। আমরা প্রত্যেক বাংলাদেশি নাগরিককে সামরিক ট্রেনিং দিয়ে প্রস্তুত করবো যুদ্ধের জন্য। প্রত্যেকটি ছাত্র যেনো রাইফেল চালাতে জানে। সামান্য ফিল্ডক্রাফট মিলিটারি ট্রেনিং আমরা তাদের দেবো। যাতে করে কেউ যেনো আমাদের দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকাতে না পারে। আমরা যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছি, চিরকাল জয়ী হবে বাংলাদেশ।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের জাতির বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাতে গেলে বারবার তাদেরকে চিন্তা করতে হবে। যত বড় শক্তিই হোক— আরে ভারততো কিছুই না, এর থেকে বড় শক্তিও যদি আসে তাহলেও বাংলাদেশকে পদানত করতে পারবে না। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ফলে নতুন এক বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, নতুন এক বাংলাদেশ আমরা সৃষ্টি করবো। যেখানে কোনও বৈষম্য থাকবে না, যেখানে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে কেউ কোনও কটাক্ষ করতে পারবে না। কোনও ভারতীয় দালাল বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। এখন আর কথা বলার সময় নাই এখন অ্যাকশনে যাবার সময়।’

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ। সমাবেশ শেষে তারা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন।
 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৯:৪৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যেক নাগরিককে যুদ্ধের ট্রেনিং দেব: হাফিজ

আপডেট সময় ০৯:৪৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রত্যেক বাংলাদেশি নাগরিককে সামরিক ট্রেনিং দিয়ে প্রস্তুত করা হবে যুদ্ধের জন্য। প্রত্যেকটি ছাত্র যেনো রাইফেল চালাতে জানে সে ব্যবস্থা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষক ভারত সরকার ও তাদের গণমাধ্যমের অবিরাম মিথ্যা প্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন তিনি।


বাংলাদেশ একটি জনযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন হয়েছে জানিয়ে রণাঙ্গনের এই বীর যোদ্ধা বলেন,
সাধারণ মানুষ যুদ্ধ করে এ দেশের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ন এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে সঠিক ও যেকোনো কালিমামুক্ত রাখবে, এটি হলো আমাদের শপথ।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। প্রত্যেকটি ইনস্টিটিউশনকে ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি। এরপর দেশ ছেড়ে সাবেক আশ্রয়স্থল ভারতে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য, আনস্টেবল করার জন্য। আমি অবাক হয়ে যাই পৃথিবীর বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কীভাবে তাকে আশ্রয় দিলো। তারা কী ৫ আগস্টের লাখ লাখ মানুষের প্রমত্ত ঢেউ দেখেনি? যা দেখে শেখ হাসিনা এমনকি ইউনিফর্মধারী বাহিনী পর্যন্ত পালিয়ে গিয়েছিল। এই দৃশ্য দেখার পর কীভাবে তারা (ভারত) কল্পনা করে, কীভাবে হিসাব করে, দেশ দখল করতে কতদিন লাগবে।’


তিনি বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে ভারতের মনটা অনেক ক্ষুদ্র। প্রত্যেকটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে তারা (ভারত) বিষিয়ে তুলেছে। প্রত্যেকটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র আজ তাদের বিরুদ্ধে। সবচেয়ে বড় হিন্দু রাষ্ট্র নেপাল পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে। কারণ তারা (ভারত) যে দাদাগিরি করে, প্রতিবেশীকে দাবিয়ে রাখতে চায়— এটাতো একবিংশ শতাব্দীর মানুষ গ্রহণ করবে না। বাংলাদেশতো মোটেই না, যারা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে।’

মেজর অব. হাফিজ বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পৃথিবীর কোনও রাষ্ট্রে নাই। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়া কল্পকাহিনী ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে যে, এখানে (বাংলাদেশে) হিন্দুদের ওপর অন্যায়-অবিচার করা হচ্ছে। এ ধরনের কল্পকাহিনী ছড়িয়ে তারা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় যে, বাংলাদেশের মানুষ একপেশে, বাংলাদেশে কারও জীবন নিরাপদ নয়। আমরা সম্পূর্ণ এই মিথ্যাচারের নিন্দা জানাচ্ছি।’
 

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ যদি তারা (ভারত) শুরু করে তাহলে এই যুদ্ধ তাদের দেশে গিয়েই শেষ হবে। আমরা প্রত্যেক বাংলাদেশি নাগরিককে সামরিক ট্রেনিং দিয়ে প্রস্তুত করবো যুদ্ধের জন্য। প্রত্যেকটি ছাত্র যেনো রাইফেল চালাতে জানে। সামান্য ফিল্ডক্রাফট মিলিটারি ট্রেনিং আমরা তাদের দেবো। যাতে করে কেউ যেনো আমাদের দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকাতে না পারে। আমরা যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছি, চিরকাল জয়ী হবে বাংলাদেশ।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের জাতির বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাতে গেলে বারবার তাদেরকে চিন্তা করতে হবে। যত বড় শক্তিই হোক— আরে ভারততো কিছুই না, এর থেকে বড় শক্তিও যদি আসে তাহলেও বাংলাদেশকে পদানত করতে পারবে না। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ফলে নতুন এক বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, নতুন এক বাংলাদেশ আমরা সৃষ্টি করবো। যেখানে কোনও বৈষম্য থাকবে না, যেখানে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে কেউ কোনও কটাক্ষ করতে পারবে না। কোনও ভারতীয় দালাল বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। এখন আর কথা বলার সময় নাই এখন অ্যাকশনে যাবার সময়।’

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ। সমাবেশ শেষে তারা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন।