শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত থেকে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত মাইকে ঘোষণা দিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষে জড়ায় তিন গ্রামের লোকজন। পরে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখনও এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
জানা যায়, শনিবার বিকেলে উপজেলার বর্ণি গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোন চার্জ দেয়া নিয়ে কাঁঠালবাড়ী গ্রামের আরেকজনের তর্কাতর্কি হয়। এরপর থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।
এ ঘটনায় এক পক্ষের লোকজন বর্ণি এলাকায় সড়কে গাড়ি আটক করে। পরে থানা সদরে কোম্পানীগঞ্জ, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী তিন গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করেন। পরে এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। প্রায় ৪ ঘণ্টা ব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ৭০ জন আহত হন। রাতে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিকে এ ঘটনার জের ধরে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন উপজেলার বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ি গ্রামের লোকজন। সিএনজিচালিত অটেরিকশায় মাইক বেঁধে গ্রামের লোকজনকে সংঘর্ষের জন্য বেরিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। এতে করে পরিস্থিতি দ্রুত থমথমে হয়ে ওঠে। এরপর বেলা ১১টার দিকে দুই গ্রামের লোকজন উপজেলার থানা বাজার পয়েন্টে এসে সংঘর্ষে জড়ান। সহস্রাধিক মানুষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এলাকা। এ সময় সংঘর্ষ ঠেকাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন।
আজ বেলা ২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী।
রোববারের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রাসেল।
তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, শনিবার রাতে কোম্পানীগঞ্জে একটি দোকানে মোবাইল চার্জ দেয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের কথা কাটাকাটি ও পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষ চলাকালে বেশকিছু দোকান ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। রাতে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিকে রোববার সকালে ফের মাইকে ঘোষণা দিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী গ্রামের লোকজন একে অপরকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেয়। একইসঙ্গে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষে লিপ্ত হয় উভয়পক্ষই। সেসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবারবুলেট নিক্ষেপ করে। এরপর দুপুরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।