ঢাকা ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবির ৩ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদ :

ছবি সংগৃহীত

ঢাবির ৩ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ।

এনসিটিভির সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিন শিক্ষার্থী, সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিভাগটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।


পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি গ্রাফিতি রাখাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি নামের একটি প্ল্যাটফর্মের সদস্যদের  হামলার ঘটনায় অন্যদের সঙ্গে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রুপাইয়্যা শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, ১৫তম ব্যাচের রাহী নায়েব ও ববি বিশ্বাস আহত হন।


এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে

হামলার শিকার গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ববি বিশ্বাস বলেন, ‘একটা জাতিগোষ্ঠী যখন নিজের সংস্কৃতি, ভাষা নিয়ে বেড়ে ওঠে, তাকে কীভাবে আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলতে পারি! তাদের যে  অস্তিত্বের স্বীকৃতি আদিবাসী শব্দ তা মুছে ফেলার অধিকার আমাদের কে দেয়! গতকাল যখন আমরা মতিঝিলে যাই তখন আমরা সবাই নিরস্ত্র। আমরা সবাই শিক্ষার্থী এবং অ্যাকটিভিস্ট ছিলাম। আমরা কেবল কিছু প্ল্যাকার্ড নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম, কিন্তু যাওয়ার ১০ মিনিট পরই কে যেন আমাদের দিকে একটি স্টাম্প ছুড়ে মারে। এ দেশের পতাকাকে মারাত্মকভাবে অপমান হতে দেখেছি গতকাল। দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটার মধ্যে পতাকা বেঁধে নিয়ে এসেছিল তারা। সেই পতাকা বাঁধা অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। আমার ওপর, শ্রেষ্ঠা দিদিরওউপর, আমার বন্ধু রাহী ও অন্যদের ওপর আঘাত করা হয়। আমাদের রক্ত লেগেছে সেই অস্ত্রে বাঁধা পতাকাগুলোয়। এ দেশে যারা অধিকারের কথা বলে, তাদের ওপর হামলা করা হয়। অধিকারের কথা বলতে গেলে মানুষের হাতে মানুষকে রক্তাক্ত করার সংস্কৃতির অবসান হোক।’

আহত আরেক শিক্ষার্থী রাহী নায়েব বলেন, ‘তারা আগে থেকেই স্টাম্প নিয়ে অবস্থান করেছিল। আমরা ধারণা করছিলাম, তারা আমাদের ওপর হামলা করবে। কিন্তু পুলিশ মাঝখান থেকে সরে গিয়ে হামলার সুযোগ করে দেবে, তা আমরা আশা করি নাই। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে ফুটেজ দেখে সবাইকে গ্রেফতার করা সম্ভব। সরকার যদি তাদের গ্রেফতার না করে, তাহলে আমরা বুঝে নেব, এই সরকার কারা পরিচালনা করছে।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক  রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিন শিক্ষার্থীসহ যাদের ওপর হামলা করা হয়েছে, যারা এখন হাসপাতালে কাতরাচ্ছে, এই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত;  তাদের ঘৃণা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের নাই। আমরা তাদের গ্রেফতার ও যৌক্তিক শাস্তির দাবি জানাই। আজ পাঠ্যবই থেকে আদিবাসীদের যে স্বীকৃতি তা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি তাদের সহ্য করাও হচ্ছে না। বাংলাদেশের ৬১টি জেলায় সিভিল শাসন, কিন্তু তিন পার্বত্য জেলায় নির্জলা সেনাশাসন। এটা কোনোদিন আমরা বরদাশত করতে পারি না। একটা নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী যাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি আছে তাদের আদিবাসী বলে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না এই বলে যে তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী। এমনকি পাঠ্যবইয়ে তাদের স্বীকৃতি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, তাদের সহ্য করাও হচ্ছে না। পাহাড়ে তাদের জমি উৎখাত করা হচ্ছে আবার এখন সমতলেও তাদের ওপর হামলে পড়া হচ্ছে। দ্রুত এই হামলাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, নাহলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাব।’

সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন গতকাল বহুত্ববাদী রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, তখনই আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা প্রয়োজনে আবারও আন্দোলনে নামব, তবুও একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব।’

আদিবাসী বিতর্কের অবসানে বাহাসে বসার আহ্বান করে তিনি বলেন, ‘অনেকে ভাবে আদিবাসী মানে আগে এসেছে। বিষয়টি এমন নয়। ব্রিটিশ উপনিবেশের পর যেসব জাতীগোষ্ঠী বৃহত্তর জাতীগোষ্ঠীর পাশাপাশি নিজস্ব ভাষা, পোশাক, সংস্কৃতি নিয়ে টিকে আছে তাদের আদিবাসী বলা হয়। এ বিষয়টি বুঝতে না পারার কারণেই এত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। যাদের এটি বুঝতে সমস্যা হয়, তাদের মুক্ত বাহাসে আমন্ত্রণ জানাতে চাই যে আদিবাসী বলতে জাতিসংঘ কী বোঝায়,আমরা কী বোঝাতে চাই আর তারা কী ধারণা রাখছে। এই বিষয়ের সমাধান হবে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে, রাজপথে সহিংসতায় নয়।’

বিভাগের শিক্ষার্থী নুমান আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল যে হামলা হয়েছে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করণীয় আছে। কারণ, স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি যে প্রতিনিধিদল এনসিটিভিতে দাবি নিয়ে গিয়েছিল তাদের নামের নিচে লেখা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী যদি আরেকজনের ওপর আক্রমণ চালায়, তাহলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ নিতে হবে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এর দ্রুত বিচার করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসিনা ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করেনি, আমরা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এই সরকারও ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তাদের খুব বেশি সময় দেয়া হবে না। প্রয়োজনে পড়লে আমরা আবারও পদত্যাগের ডাক দেব।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সেলের সদস্য মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘তারা রূপাইয়্যা শ্রেষ্ঠার ওপর এমনভাবে হামলা করেছে, তার মাথায় ১২টি সেলাই লেগেছে। এই রূপাইয়্যা অভ্যুত্থানের সময় মোহাম্মদপুর থেকে নিয়মিত আন্দোলন করেছে। তার ভাইকে স্থানীয় কাউন্সিলর তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে। যাদের মদতে শ্রেষ্ঠার ওপর হামলা করা হয়েছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি যখন রাজুতে কর্মসূচি করে, তখনি পাহাড়ে আগুন লাগে, সংঘর্ষ হয়। তারা এখান থেকে এসবে উসকানি দিয়েছে। যারা পেছন থেকে এসবে উসকানি দিয়েছে, তাদেরকে সামনে এনে গ্রেফতার করতে হবে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক খান, সাইফুল আলম চৌধুরী, কাজলী শেহরীন ইসলাম, সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক মার্জিয়া রহমানসহ বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১০:০৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
৬ বার পড়া হয়েছে

ঢাবির ৩ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ

আপডেট সময় ১০:০৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

ঢাবির ৩ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ।

এনসিটিভির সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিন শিক্ষার্থী, সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিভাগটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।


পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি গ্রাফিতি রাখাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি নামের একটি প্ল্যাটফর্মের সদস্যদের  হামলার ঘটনায় অন্যদের সঙ্গে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রুপাইয়্যা শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, ১৫তম ব্যাচের রাহী নায়েব ও ববি বিশ্বাস আহত হন।


এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে

হামলার শিকার গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ববি বিশ্বাস বলেন, ‘একটা জাতিগোষ্ঠী যখন নিজের সংস্কৃতি, ভাষা নিয়ে বেড়ে ওঠে, তাকে কীভাবে আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলতে পারি! তাদের যে  অস্তিত্বের স্বীকৃতি আদিবাসী শব্দ তা মুছে ফেলার অধিকার আমাদের কে দেয়! গতকাল যখন আমরা মতিঝিলে যাই তখন আমরা সবাই নিরস্ত্র। আমরা সবাই শিক্ষার্থী এবং অ্যাকটিভিস্ট ছিলাম। আমরা কেবল কিছু প্ল্যাকার্ড নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম, কিন্তু যাওয়ার ১০ মিনিট পরই কে যেন আমাদের দিকে একটি স্টাম্প ছুড়ে মারে। এ দেশের পতাকাকে মারাত্মকভাবে অপমান হতে দেখেছি গতকাল। দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটার মধ্যে পতাকা বেঁধে নিয়ে এসেছিল তারা। সেই পতাকা বাঁধা অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। আমার ওপর, শ্রেষ্ঠা দিদিরওউপর, আমার বন্ধু রাহী ও অন্যদের ওপর আঘাত করা হয়। আমাদের রক্ত লেগেছে সেই অস্ত্রে বাঁধা পতাকাগুলোয়। এ দেশে যারা অধিকারের কথা বলে, তাদের ওপর হামলা করা হয়। অধিকারের কথা বলতে গেলে মানুষের হাতে মানুষকে রক্তাক্ত করার সংস্কৃতির অবসান হোক।’

আহত আরেক শিক্ষার্থী রাহী নায়েব বলেন, ‘তারা আগে থেকেই স্টাম্প নিয়ে অবস্থান করেছিল। আমরা ধারণা করছিলাম, তারা আমাদের ওপর হামলা করবে। কিন্তু পুলিশ মাঝখান থেকে সরে গিয়ে হামলার সুযোগ করে দেবে, তা আমরা আশা করি নাই। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে ফুটেজ দেখে সবাইকে গ্রেফতার করা সম্ভব। সরকার যদি তাদের গ্রেফতার না করে, তাহলে আমরা বুঝে নেব, এই সরকার কারা পরিচালনা করছে।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক  রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিন শিক্ষার্থীসহ যাদের ওপর হামলা করা হয়েছে, যারা এখন হাসপাতালে কাতরাচ্ছে, এই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত;  তাদের ঘৃণা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের নাই। আমরা তাদের গ্রেফতার ও যৌক্তিক শাস্তির দাবি জানাই। আজ পাঠ্যবই থেকে আদিবাসীদের যে স্বীকৃতি তা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি তাদের সহ্য করাও হচ্ছে না। বাংলাদেশের ৬১টি জেলায় সিভিল শাসন, কিন্তু তিন পার্বত্য জেলায় নির্জলা সেনাশাসন। এটা কোনোদিন আমরা বরদাশত করতে পারি না। একটা নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী যাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি আছে তাদের আদিবাসী বলে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না এই বলে যে তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী। এমনকি পাঠ্যবইয়ে তাদের স্বীকৃতি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, তাদের সহ্য করাও হচ্ছে না। পাহাড়ে তাদের জমি উৎখাত করা হচ্ছে আবার এখন সমতলেও তাদের ওপর হামলে পড়া হচ্ছে। দ্রুত এই হামলাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, নাহলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাব।’

সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন গতকাল বহুত্ববাদী রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, তখনই আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা প্রয়োজনে আবারও আন্দোলনে নামব, তবুও একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব।’

আদিবাসী বিতর্কের অবসানে বাহাসে বসার আহ্বান করে তিনি বলেন, ‘অনেকে ভাবে আদিবাসী মানে আগে এসেছে। বিষয়টি এমন নয়। ব্রিটিশ উপনিবেশের পর যেসব জাতীগোষ্ঠী বৃহত্তর জাতীগোষ্ঠীর পাশাপাশি নিজস্ব ভাষা, পোশাক, সংস্কৃতি নিয়ে টিকে আছে তাদের আদিবাসী বলা হয়। এ বিষয়টি বুঝতে না পারার কারণেই এত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। যাদের এটি বুঝতে সমস্যা হয়, তাদের মুক্ত বাহাসে আমন্ত্রণ জানাতে চাই যে আদিবাসী বলতে জাতিসংঘ কী বোঝায়,আমরা কী বোঝাতে চাই আর তারা কী ধারণা রাখছে। এই বিষয়ের সমাধান হবে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে, রাজপথে সহিংসতায় নয়।’

বিভাগের শিক্ষার্থী নুমান আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল যে হামলা হয়েছে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করণীয় আছে। কারণ, স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি যে প্রতিনিধিদল এনসিটিভিতে দাবি নিয়ে গিয়েছিল তাদের নামের নিচে লেখা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী যদি আরেকজনের ওপর আক্রমণ চালায়, তাহলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ নিতে হবে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এর দ্রুত বিচার করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসিনা ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করেনি, আমরা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এই সরকারও ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তাদের খুব বেশি সময় দেয়া হবে না। প্রয়োজনে পড়লে আমরা আবারও পদত্যাগের ডাক দেব।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সেলের সদস্য মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘তারা রূপাইয়্যা শ্রেষ্ঠার ওপর এমনভাবে হামলা করেছে, তার মাথায় ১২টি সেলাই লেগেছে। এই রূপাইয়্যা অভ্যুত্থানের সময় মোহাম্মদপুর থেকে নিয়মিত আন্দোলন করেছে। তার ভাইকে স্থানীয় কাউন্সিলর তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে। যাদের মদতে শ্রেষ্ঠার ওপর হামলা করা হয়েছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি যখন রাজুতে কর্মসূচি করে, তখনি পাহাড়ে আগুন লাগে, সংঘর্ষ হয়। তারা এখান থেকে এসবে উসকানি দিয়েছে। যারা পেছন থেকে এসবে উসকানি দিয়েছে, তাদেরকে সামনে এনে গ্রেফতার করতে হবে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক খান, সাইফুল আলম চৌধুরী, কাজলী শেহরীন ইসলাম, সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক মার্জিয়া রহমানসহ বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।